পাহাড়ে আহারে
লেখক – দামু মুখোপাধ্যায়
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – স্মারক রায়
সম্পাদনা – সুমেরু মুখোপাধ্যায়
শিল্পনির্দেশনা – সায়ন্তন মৈত্র
বই নকশা – ময়াঙ্ক রাই
পৃষ্ঠা – ৩৬০
ডিমাই সাইজ, হার্ড বাউন্ড, কাপড়ে বাঁধাই
মূল্য – ৫০০ ভারতীয় টাকা
ISBN – 978-93-87577-12-1

অনলাইন কিনতে –
বইচই ও থিংকারস লেন ডট কম































উঠল বাই তো পাহাড়ে যাই— অতীশ দীপঙ্কর থেকে উজ্জ্বল পাল, সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। ঘরের কাছের অযোধ্যা-শুশুনিয়া-দলমা দিয়ে শুরু করে পায়ে পায়ে হিমালয়। দেবতাত্মার শরণেই যখন আসা গেল, তখন বিন্ধ্য, সাতপুরা, আরাবল্লি, নীলগিরিরাই বা বাদ যায় কেন?  শিখর জয়ের নেশায় রাকস্যাক কাঁধে ডাকাবুকোদের বেরোতে দেখে সুবচনীর খোঁড়া হাঁসও বেডিং-বিস্তারা বেঁধে মাঙ্কিটুপি-আলোয়ান মুড়ে হাওয়া বদলে চলল গিরি শহরে। কেউ কেউ পুণ্যির ট্যাঁক ভরাতে কেদার-কামাখ্যায় হত্যে দিল। তদ্দিনে যেখানে পেরেছে হিলস্টেশন ফেঁদে আরাম-বিলাসের বন্দোবস্ত করে ফেলেছে সাহেবসুবোরা। পকেটে না কুলোলে কালীবাড়ি, কালিকমলি বা কালীবাবুর বোর্ডিং। খ্যাটনের ব্যবস্থা দাদা-বৌদির পাইসহোটেলে। শুধু কি তাই? কোন ফিকিরে কাশ্মীরি হারিসা হালিম অবতারে নিজামি হেঁশেল আলো করল, বেঁকাচোরা চড়াই-উৎরাই ঠেঙিয়ে কারা বেকারি বয়ে আনল, বরফিলি ভোরে কোন নানওয়াইয়ের দোকানে উমদা নানখাটাই মেলে, খিচুড়ি খেয়ে পেটে চর পড়লে কোন টোটকায় তাকে কব্জা করা যায়— খোঁজখবর না করলে ধম্মে সইছিল না বলেই লেখা হল এই বই। ফুড ট্যুরিজম-এর মনোবাঞ্ছা এবার চড়ল ভারতের হিজিবিজি একরাশ পাহাড়ে।

নেপালিদের মোমো-থুকপা, কেভেন্টার্সের স্যসেজ-হ্যাম, মুসৌরির কেক-প্যাটি, কাশ্মীরি ওয়াজওঁয়া, অহমিয়া পিঠেপত্তর, উটি-কোডাইয়ের হাতেগড়া চকলেট, কুর্গের পান্ডিকারি, সাতপুরার রাজমা-চাওয়াল— এসব চেখে না দেখলে জীবন আলুনিবৎ। পাকদণ্ডিতে চক্কর কাটতে হলে পাহাড়ের রাশি রাশি ফলও চেখে দেখা। পাহাড়ি নদীর ট্রাউট-মহাশের-বোরোলি। মঠ-মন্দিরের পুকুরপারে রোদ পোয়ানো কাছিম-কচ্ছপদের খবর রাখাও জরুরি। আইন-কানুনের জাঁতাকল যেমন আছে, তেমনই নিয়মভাঙার রেকর্ডও রয়েছে পাহাড়ে। নইলে অমন যে পল্টন, যুদ্ধের থালায় পিস সাজাতে তাদেরও কি আর হাত নিশপিশ করে না! তবে বন্দুক বাগালেই শিকারি হয় না, তাহলে তির–বল্লম সব মাচায় তুলে অ্যাদ্দিনে ভেগান হয়ে যেত লেপচা-মুণ্ডা-চেঞ্চুরা। সে সব হয়নি বটে, কিন্তু কালে কালে তাদের খাবারদাবারের তত্ত্বতালাশও তো করা হয়নি তেমন। তাই অলৌকিক ধূম্রজালের আড়ালে হারিয়ে গিয়েছে কত সাবেক উপকরণ, মালমশলা আর প্রণালী। এবার হিন্দু খ্রিস্টান পাঠান মোগল এক পেটে হল লীন। পড়ার পরে পাহাড়ে চড়বেন না পাহাড়ে চড়তে চড়তে পড়বেন তা আপনারাই ঠিক করুন।

দামু মুখোপাধ্যায়

লেখকের ছবি- শুভেন্দু সরকার

পৃথিবীর আলো দেখা ইস্তক কলকাতার বাসিন্দা। শিক্ষা-দীক্ষার খতিয়ান পেশ করে ঘোরতর বিড়ম্বনার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তা আপাতত উহ্যই থাকল। রোজগারের ধান্দায় নানান বিদঘুটে পেশায় নাজেহাল হওয়ার পরে মধ্যবয়েসে চাকরিজীবনে কিছুটা ধাতস্থ হওয়ার সুযোগ হয়। লেখালেখির বাতিক কোনওকালেই বিশেষ ছিল না, শেষে দায়ে পড়ে এপথে পা বাড়ানো। সে সমস্ত অপচেষ্টা আদৌ কেউ আমল দেবেন, বায়ুবিকারগ্রস্ত অবস্থাতেও তেমন কু-চিন্তা মগজে সেঁধোয়নি। আবার সে সমস্ত হাবিজাবি যখন পাঠকের লাই পেয়ে দু’ মলাটের মাঝে পুরে দিলে ইষ্টনাম জপ করা ছাড়া উপায় থাকল না। নোলা-সর্বস্ব জীবন। যে কোনও মুলুকের হরেক কিসিম পদ চেখে দেখার নেশা আশৈশব বজায় থেকেছে। খাবার-দাবার নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও ছুঁত্‍‌মার্গ গজিয়ে ওঠার সুযোগ পায়নি। পাকযন্ত্র চালু রাখা বাদে আরও বেশ কিছু বদভ্যাস সযত্নে লালিত। হকেনকে খুন্তিবাজিতে সহবাসীদের যথাসম্ভব নাকাল করে তৃপ্তিলাভ হয়। ইনসমনিয়ার খাতিরে রাত জেগে নাগালে আসা সব রকম বই-পত্তর ঘাঁটাঘাঁটি করার বাতিক রয়েছে। দীর্ঘ অনভ্যাসের ফলে তাতে হাঁফ ধরলে তল্পিতল্পা গুটিয়ে নিরুদ্দেশ হওয়ার কুমতলব হামেশাই দেখা দেয়। এছাড়া জুতসই বিষয় ও দোসর মিলে গেলে হাতের কাজ ফেলে রেখে খোশগল্পে জুটে হল্লা করার দুর্নাম সেই স্কুলবেলা থেকে সারিবাদি সালসার লেবেলের মতো গায়ে সেঁটে গিয়েছে। কেউ কেউ অবশ্য ক্যারেক্টার সাট্টিফিকেটে ‘গেঁতো’, ‘কামচোর’, ‘গুলবাজ’ ইত্যাদি অযাচিত বিশেষণ জুড়ে দিতেও কার্পণ্য করেননি। তবে নিন্দুকদের কথা কোনও সুবুদ্ধিসম্পন্ন সদালাপী সচ্চরিত্র কস্মিনকালেও শুনেছেন বলে জানা নেই।

আগের বই- খ্যাটন সঙ্গী

আলোচনা সমালোচনাগুলি পড়তে ছবির উপর ক্লিক করুন।

আজকাল ১৪ জুলাই ২০১৯
একদিন ৮ জুন ২০১৯
সাপ্তাহিক বর্তমান ২০ জুলাই ২০১৯
এই সময় ২ জুন ২০১৯