ভালবাসি তাই জানাই গানে
লেখক – অরুণেন্দু দাস
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – এ এফ এম মনিরুজ্জমান শিপু
সম্পাদনা – সংহিতা সান্যাল
শিরোনামলিপি- পার্থ দাশগুপ্ত
শিল্পনির্দেশনা – সায়ন্তন মৈত্র
বই নকশা – ময়াঙ্ক রাই
পৃষ্ঠা –৩৪০
রয়াল সাইজ, হার্ড বাউন্ড, কাপড়ে বাঁধাই
মূল্য – ৬০০ ভারতীয় টাকা
অতিরিক্ত সংযোজন- ছয় তারের গান, নীলার ছড়া, গিটারের তারে বেঁধে, তার সেই গানে তুমি আমি
ISBN – 978-93-87577-41-1

অনলাইন কিনতে – বইচই বা থিংকারস লেন
































এ কাহিনি এক সরল, নির্লিপ্ত অথচ অভিমানী এক সাদামাটা মানুষের। যে মানুষ বারবার ঠিকানা হারায়, আর হয়তো সে জন্যেই আশ্রয় খোঁজে গানের ভিতরে। যে মানুষ কখনও বিশেষ সংসারী হয়ে উঠতে পারল না,  জনসমক্ষে শোনাতে বড় অনীহা ছিল তাঁর। হইচই, আলো, খ্যাতি— এসবের থেকে দূরে থাকতেই চেয়েছেন। অজস্র ভুল বোঝাবুঝি, জীবনের ওঠাপড়া, আপনজনের দূরে চলে যাওয়ায় আহত হয়েও শেষপর্যন্ত শান্ত হয়ে লিখতে বসাই বুঝি বা তাঁর যাপন ছিল। আত্মজীবনী লিখতে গিয়ে ব্যক্তিগত রাগ-গর্ব-মোহ প্রকাশ করে ফেলার ঝুঁকি থেকেই যায়। তাঁর তেমন কোনও বালাই ছিলই না। যা কিছু ঘটেছে, সহজভাবে নিয়েছেন। কারও প্রতি সামান্যতম বিদ্বেষ, ‘মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি’-র রসালো কেচ্ছা, সবই সরিয়ে রেখেছেন বলার অযোগ্য বিবেচনায়। তাই কেবল বলেছেন, যা ভালবাসার কথা বলে, সৃষ্টি করে চলার কথা বলে। রেঙ্গুন থেকে ঢাকা-বিক্রমপুর হয়ে কলকাতা ছুঁয়ে ইংল্যান্ড— তাঁর যাত্রাপথের দু’পাশে যত মুখ, সবই বন্ধুর। আর পাঁচজন মানুষের মতো তিনিও নিয়েছেন ভুল সিদ্ধান্ত কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থনের ধারেকাছেও না গিয়ে নিজেকে সমালোচনার মুখোমুখি দাঁড় করাতে দ্বিধাবোধ করেননি। মেয়েদের প্রতি তাঁর পুরনো ধ্যানধারণা, নিজের পরিবারকে ‘অন্যরকম’ ভাবা, বারবার চাকরি ও ঠিকানা বদল, বাস্তববুদ্ধির অভাব—এই প্রতিটি বিষয়কে নিজের ভুল বলে উপস্থাপন ও সে ভুলের দায় মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করে নেওয়ার উদাহরণ মিলবে বারবার। স্বীকারোক্তির এমন সততা সকলের থাকে না। যে মানুষ এতটুকু খ্যাতি পায়, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সে মানুষ যত পারে তার অতীতের ফাঁক বুজিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। সেই লুকোছাপার লেশমাত্র নেই। তাঁর লেখা অকপট। এই কাহিনি যেন এক আলোয় মোড়া জলসা, যেখানে বসে সবাই মিলে হইচই করে গান আর প্যারডি চলছে তো চলছেই!

অরুণেন্দু দাস

জন্ম রেঙ্গুনে ১৯৩৮ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁর পরিবার রেঙ্গুন ছেড়ে প্রথমে বাংলাদেশ ও পরে কলকাতায় চলে আসে। পড়াশুনো শিবপুর বি ই কলেজে (১৯৫৬-১৯৬১), বিষয় আর্কিটেকচার। ষাটের দশকের শেষদিকে তিনি চাকরিসূত্রে ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন ও পরে সেই দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।  অরুণেন্দু বিংশ শতকের নতুন বাংলা গানের অন্যতম দিশারী ও একজন শ্রেষ্ঠ গীতিকার। তাঁর অনেকগুলি গান ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ সম্পাদিত বাংলা গানের অ্যালবামে প্রকাশিত। ইউটিউবেও ‘অরুণদার গান’ খুব জনপ্রিয় অ্যালবাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর গান আরও জনপ্রিয় হয়ে চলেছে। ২০১৯ সালের দোসরা ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় কলকাতায়।

সমালোচনা বা আলোচনাগুলি পড়তে ছবির উপরে বা লিংকে ক্লিক করুন।

আনন্দবাজার পত্রিকা ০৬ নভেম্বর ২০২১

দৈনিক ওংকার বাংলা, ৭ মার্চ ২০২১