এক স্বপ্নের ফেরিওয়ালা এসেছিলেন ইরান থেকে। ভারতীয় ফুটবলে প্রথম বিশ্বকাপার। চোখ গিয়েছিল ঝলসে। মগজে ঝিলমিল। মজিদ মানে ম্যাজিক, মজিদ মানে মায়াজাল। বছর ৪০ পরও, কোনও বিদেশি এলে উৎসুকের প্রশ্ন, ‘ভাল, কিন্তু কতটা? মজিদের মতো?’ অথচ, খেলেছিলেন সে-অর্থে একটাই মরসুম। কেল্লা ফতে তাতেই। শুরুতে ইস্টবেঙ্গলের ‘আশির বাদশা’, নব্বইয়ে রাস্তার ফকির। খোমেইনির দেশ থেকে দশ বছরের অঘোষিত নির্বাসন, ভালবাসায় প্রত্যাখ্যাত হয়ে খেলা ছেড়ে কলকাতার দুয়ারে-দুয়ারে পদপিষ্ট, যেন নিজেই ফুটবল। বেতালা সুরে ঝালাপালা জীবন। তবু, ২৯ বছর পর তিনি এলে আবেগের সুনামি হুগলি-তীরবর্তী শহরে। কাঁপিয়ে দিয়ে, নাড়িয়ে দিয়ে চলে যান, ফিরিয়ে দিয়ে পুরনো দিন। মজিদ-ম্যাজিকে মজে ম ম ভারতীয় ফুটবলের মক্কা। এই বই ধরে রাখল সব প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, সযত্ন। সিন্দুক খুলে তুলে আনল আটের দশকে বাংলা ক্রীড়া সাংবাদিকতায় কিংবদন্তিদের। পাতায়-পাতায় মতি নন্দী, অজয় বসু, অশোক দাশগুপ্ত। স্মৃতিগন্ধে এই বই এক জীবন্ত ইতিহাস, যা সংরক্ষণে একেবারেই অনুৎসাহী কলকাতার ফুটবল জগৎ।
কাশীনাথ ভট্টাচার্য
হাত পেতে নিয়ে চেটেপুটে ফুটবল খাওয়ায় আগ্রহী কাশীনাথ ভট্টাচার্য। লিওনেল মেসির টানে ঢাকা হোক বা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে দেখতে মস্কো কিংবা বিশ্বকাপের আকর্ষণে ব্রাজিল ও রাশিয়া—ফুটবলের মতোই ছুটতে রাজি আপন ছন্দে। নিজের তৃতীয় বই লিখতে অবশ্য ঘুরলেন ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’, কলকাতা ময়দানের আনাচকানাচ। মজিদ-আবেগে ভেসে বিভিন্ন পাঠাগার ও ফুটবলারদের অন্দরমহলেও। ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিদেশি ফুটবলারকে চিনতে, জানতে এবং পাঠকদের কাছে তুলে ধরতে। বিদেশি ফুটবল তাঁর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হলে শিরায়-শিরায় ভাললাগা-ভালবাসায় ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান বৈরি। বাংলা ক্রীড়া সাংবাদিকতার ছাত্র হিসাবে গর্বিত কাশীনাথের এই বইয়ের পাতা ওল্টালেই তাই টক-ঝাল-মিষ্টি ইতিহাস।
আলোকচিত্র- রনি রায়
আমাদের প্রকাশিত আগের বই গোল্লাছুট।
আলোচনা/ খবর/ সমালোচনাগুলি পড়তে ছবির উপর ক্লিক করুন।
অন লাইন www.sportsnscreen.com পত্রিকায় সমালোচনা করেছেন কৌশিক চক্রবর্তী ২৮ মার্চ ২০২০ তারিখে
ইতিহাসের জীবন্ত দলিল ‘মজিদ’
“দু’শো বাহান্ন পাতার বইটি ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল। আটের দশকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিলোত্তমায় কাটানো মজিদের মহাতারকা হয়ে ওঠা থেকে উদভ্রান্ত-দিকভ্রান্ত, বাউন্ডুলে জীবনের সমস্ত দলিল পেশ করা রয়েছে এই বইয়ে। বইটিতে যেমন তুলে ধরা হয়েছে আশির ভাঙা ইস্টবেঙ্গল দলকে পিকে ব্যানার্জির নেতৃত্বে একার কাঁধে বয়ে নিয়ে যাওয়া মজিদের লড়াই, একাশি’তে কোচ শান্ত মিত্রের সঙ্গে সংঘাত, ঠিত তেমনই রয়েছে চুরাশি, পঁচাশি এবং ছিয়াশি-র মরসুমে ফুটবল থেকে বহু দূরে সরে যাওয়া মজিদের কাটানো প্রতিটা দিনের বর্ণণা। দ্রোণাচার্য্য সৈয়দ নইমুদ্দিনের তিন বছর মাঠের বাইরে থাকা মানসিক বিকারগ্রস্থ মজিদকে ফেরানোর লড়াই এবং সাতাশি’তে কলকাতা ময়দানে তাঁর শেষ গোল কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যের থেকে কম নয়। বইটির গুণগত মান আরও বর্ধিত করেছে এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া সেই সময়ের দু’টি বহু প্রচলিত সংবাদপত্রের পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট এবং তৎকালীন সময়ে প্রকাশিত একাধিক সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর। পাশাপাশি বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে দুই প্রধানের জার্সিতে মজিদের জেতা প্রতিটা ট্রফি এবং তাঁর করা প্রতিটা গোলের পরিসংখ্যান। যা এই বইকে সমৃদ্ধ করেছে।”
সম্পূর্ণ সমালোচনাটি পড়তে ক্লিক করুন এইখানে।
ddhindusthan.com ওয়েবজিনে লেখা হয়েছে ৯ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রকাশিত হল মজিদ বিসকারকে নিয়ে লেখা বই
নিউজ ডেস্কঃ মজিদ বিসকারকে নিয়ে বাংলা ভাষায় তো বটেই, ভারতীয় কোনও ভাষায় এই প্রথম বই প্রকাশিত হল কলকাতায়। এগিয়ে এসেছিল ৯ঋকাল প্রকাশনা। লিখলেন কাশীনাথ ভট্টাচার্য। সোমবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক তাঁবুতে মজিদকে নিয়ে বইয়ের আবরণ উন্মোচন হল তাঁরই সতীর্থদের হাতে।
উপস্থিত ছিলেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, জামশিদ নাসিরি এবং নাসির আমেদ, যাঁরা খেলেছিলেন মজিদের সঙ্গে। আর ছিলেন গৌতম সরকার, যিনি খেলেছিলেন বিপক্ষে। প্রত্যেকেই একমত, মজিদের মতো বিদেশি ফুটবলার আর আসেনি ভারতে খেলতে। মজিদ মানে ম্যাজিক, মজিদ মানে মায়াজাল। অভাবনীয় ফুটবল দক্ষতা সত্ত্বেও অমীমাংসিত ধাঁধা হয়েই কলকাতা ময়দানসহ ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে থেকে গিয়েছেন ইরানের বিশ্বকাপার মজিদ।
তাঁর কথা, তাঁর কীর্তি, তাঁর কালিমা – সবই উঠে এসেছে ২৫৬ পাতার এই বইয়ে। ফুটবল উৎসাহী পাঠকের জন্য যা দু-মলাটে তুলে ধরলেন ক্রীড়া সাংবাদিক কাশীনাথ ভট্টাচার্য আর ছবিতে সাজালেন চিত্রগ্রাহক রনি রায়। বাংলার ফুটবল রসিকের কাছে এই বই অবশ্যপাঠ্য, আটের দশকের শুরুর সেই দিনগুলো ফিরে দেখতে।
আজকের লাল হলুদ বার্তায় মজিদ বইটির আলোচনা আজকের লাল হলুদ বার্তায় মজিদ বইটির আলোচনা