সুরক্ষাশমিতা: নারী সুরক্ষা বিষয়ক সংকলন
লেখা – শতাব্দী দাশ, জারিফা জাহান, সেঁজুতি বসু, যশোধরা রায়চৌধুরী, শ্রাবস্তী ঘোষ, অনুরাধা কুন্ডা, ঐশিকা চক্রবর্তী, শাশ্বতী ঘোষ, আফরোজা খাতুন, মীনা দাঁ, শর্মিষ্ঠা চৌধুরী, জিনাত রেহানা ইসলাম, মৌ ভট্টাচার্য, অমিত সরকার, সায়ন্তনী অধিকারী, স্বাতী রায়, দোলন গঙ্গোপাধ্যায়, স্বাতী রায়, সোমা রায় কর্মকার, সৈকত মুখোপাধ্যায়
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – ঐন্দ্রিলা বসাক
সম্পাদনা – স্বাতী রায়
শিল্পনির্দেশনা – সায়ন্তন মৈত্র
শিরোনামলিপি- পার্থ দাশগুপ্ত
বই নকশা – ময়াঙ্ক রাই
পৃষ্ঠা –২২৮
ডিমাই সাইজ, সফট বাউন্ড, পারফেক্ট বাঁধাই
মূল্য – ৩৫০ ভারতীয় টাকা
ISBN – 978-93-93186-49-2

অনলাইন কিনতে –
বইচই ও থিংকারস লেন ডট কম































লিঙ্গ নির্বিশেষে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে, বেড়ে উঠতে কী লাগে? ভাত, কাপড় আর মাথার উপর ছাদ। ‘মাথার উপর ছাদ’,  আসলে একটা প্রতীক। নিরাপত্তা ব্যাপারটা অনেকটা রান্নায় নুনের মতো, ঠিকমতো থাকলে কেউ আলাদা করে খেয়াল করে না বটে, তবে অভাব ঘটলে ব্যাপারটা সুবিধের হয় না।  আর আলোচনাটা যদি হয় মেয়েদের নিয়ে, তাহলে তো কথাই নেই।  আমাদের সমাজ মেয়েদের যৌনতার উপর নির্মাণ করেছে পরিবার, গোষ্ঠী, দেশের মর্যাদা, কাজেই নারীশরীরের যৌনসুরক্ষা তার কাছে অনেক দামি। তাই তাকে শিকল পরাও, গণ্ডিতে বাঁধো।

আগের প্রজন্মের অনেকেই যেমন নিত্য হিংসার মধ্যে বাস করেও একমাত্র বধূহত্যা ছাড়া আর কোনও কিছুকেই গৃহহিংসা বলে চিনতে শেখেননি, মেয়েদের ভার্চুয়াল নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সেই একই বীজ কিছুটা বহন করে বর্তমান প্রজন্মের মেয়েরাও। মানসিক চাপ, খারাপ লাগা যতই থাকুক, তাকে হিংসা বলে চিনে নিতে পারি না। তার উপর ঠিক করে জানাও হয় না কোথায় কখন নিরাপত্তার অভাব বলে চেঁচাবে, কোন পরিস্থিতিতে দ্বারস্থ হবে কর্তৃপক্ষের। কীভাবে প্রতিকার চাইবে। জেলবন্দি নারীদের যে কতভাবে জেলের ভেতর হেনস্থা হতে হয়, যেভাবে তাদের বোধবুদ্ধিহীন, অনুভূতিহীন, আত্মমর্যাদাহীন মাংসপিণ্ডে পরিণত করার অহরহ চেষ্টা চলে, মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা কর্তৃপক্ষ। কোনও ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও পুরুষদের ওপরই বেশি হয়ে থাকে; স্বীকৃত ওষুধ, একই নিয়মে, একই মাত্রায় মহিলাদের ওপর প্রয়োগে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায় না, বরং থাকে ক্ষতির আশঙ্কা।  নারী শরীরের প্রজনন ক্ষমতা যেহেতু পিতৃতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি, তাই নারী শরীর সুরক্ষাযোগ্য বস্তুবিশেষ। দেশকালের সীমা ছাড়িয়ে এইভাবেই নারীর শরীরকে ব্যবহার করা হয়েছে। নারীর শরীরচর্চাকে কিছু ক্ষেত্রে অনুমোদন দিয়েছে সমাজ, আবার কিছু ক্ষেত্রে বিদ্রূপ বর্ষণ করে নারীকে বিরত করার চেষ্টা করেছে। বঙ্গমহিলার শরীরচর্চার অতীত থেকে বর্তমানকে তাই পিতৃতান্ত্রিক সীমাবদ্ধতা ও তা লঙ্ঘনের প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে দেখার ইচ্ছে এই সংকলনের। সুখের কথা এই যে, আজকের দিনে অনেক মেয়েরাই গণ্ডিছেঁড়ার সাহস পেয়েছেন। সেই সঙ্গে মেয়েদের সুরক্ষার সংজ্ঞাটিও আগেকার একমাত্রিকতা ছাড়িয়ে হয়ে উঠেছে বহুমাত্রিক, জড়িয়ে গেছে জীবনের বিভিন্ন বাঁকে, অন্দর থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বাইরে,  রিয়েলিটি থেকে ভার্চুয়ালে, সুসময় থেকে অসময়ে।  এই বইতে মেয়েদের সুরক্ষা নিয়ে নানা অভিজ্ঞতা মন্থন করে বিভিন্ন দিক থেকে আলো ফেলার চেষ্টা। আরও বুঝতে চাওয়া, কী করলে প্রজন্মান্তরের মেয়েদের নিরাপত্তার বোধ আর একটু পোক্ত হয়। লক্ষ্য সর্বস্তরের মেয়েদের সার্বিক সুরক্ষা। সেই কাঙ্খিত বিন্দুতে না পৌঁছানো অবধি বিস্তৃত হোক আলোচনা।  

স্বাতী রায়

একজন অতি সাধারণ ভারতীয় মহিলা। দশের মধ্যে দশম জন। উত্তর কলকাতার শহরতলিতে জন্ম।  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর। ১৯৯৪ সালে সফটওয়ার দুনিয়ায় পা রাখা। আপাতত কর্মজীবনে ইতি টেনেছেন। কলকাতার মধ্যবিত্ত পরিবেশে মেয়ে হয়ে জন্মানোর সুবাদে ছোট থেকেই লিঙ্গ-বৈষম্যে সচেতন।  তারই কারণ খুঁজতে মানবীবিদ্যা বিষয়ে নিজস্ব পড়াশোনার আগ্রহ জন্মানো এবং টুকটাক সে নিয়ে লেখালেখি। পপুলার সায়েন্স নিয়েও বাংলায় লিখতে ভালবাসেন। এছাড়াও শখ বলতে  সাহিত্যপাঠ  আর বেড়ানো । স্বপ্ন দেখা যে একদিন সব বাঙালি মেয়েরা অর্থনৈতিক স্বনির্ভর হবে এবং নিজের অর্থের ব্যবস্থা নিজেই করবে। সেই উদ্দেশ্যে মেয়েদের পার্সোন্যাল ফিনান্স ম্যানেজমেন্টের জ্ঞানচর্চার জন্য বাংলায় একটি ব্লগ লেখেন ।