ষাটে অবসর নয়, চিরবিদায়।
২৫ নভেম্বর ২০২০ মারা গিয়েছিলেন আর্জেন্তিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার মূল কারিগর। এক বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত। নাম শুনলে এখনও, তাঁর দেশ আর্জেন্তিনা থেকে বহু দূরের এই বাংলায়, অনেকেরই চোখে জল। তাঁরা যে টেলিভিশনে সাদাকালো ছবিতে দেখেছিলেন ছিয়াশির সেই দিয়েগো আরমান্দো মারাদোনাকে। খেলা দেখা শেষ হলে যেভাবে টিভিটা দুপাশে যেন ‘শাটার’ টেনে ঢেকে দিতেন, বুকের গোপনে সেভাবেই সেই স্মৃতি আজও সঞ্চিত।
বৈপরীত্যই তাঁর ইউএসপি। ঠিক যেমন খেলার মাঠে। এক ম্যাচে চার মিনিটের মধ্যে প্রমাণ দিয়েছিলেন হাত ও পায়ের ব্যবহারে! ভাল আর খারাপের এই অদ্ভুত সহাবস্থানই মারাদোনার জীবন, যা তাড়া করে চলেছে তাঁকে, মৃত্যুর পরও। আকৈশোর প্রেমিকা পরে স্ত্রী, আবার সঙ্গে না-থাকলেও ম্যানেজার! কোকেনের নেশায় বিপর্যস্ত, প্রাণ সংশয়। আদালতে গিয়ে বিচারককে সরাসরি জানানো, ‘হ্যাঁ, নেশা করেছি, কত জরিমানা দিতে হবে, বলুন’! আর মৃত্যুর এক বছর পর উঠে আসছে ধর্ষণের অভিযোগ।
একই অঙ্গে এত রূপের মতো এই বইতে দু-মলাটে মারাদোনার জীবনী, আত্মজীবনী এবং আরও কয়েকটি লেখা। আত্মজীবনী ‘ইও সোই এল দিয়েগো ’, স্প্যানিশ-এ লিখেছিলেন দানিয়েল আরকুচ্চি ও আরনেস্তো শেরকিস বিয়ালো। ইংরেজিতে ‘এল দিয়েগো’, মার্সেলা মোরা ই আরাউহো-র অনুবাদে। সেই মার্সেলার সোঙরন সাক্ষাৎকার নিয়েছেন লেখক, মারাদোনা-পাঠকের কাছে যা বিশেষ আকর্ষণ। আর বইতে ফিরে-পড়া বিতর্কিত কিছু মারাদোনা-মিথের বিনির্মাণ।
কাশীনাথ ভট্টাচার্য
জন্ম ২৮ মে, ১৯৭০। চা-বাগানের ধার ঘেঁষা বীরপাড়ার ফুটবল-মাঠ সংলগ্ন স্কুলপাড়ায় ‘খেলাপড়া’। স্নাতক স্তরে স্কটিশ চার্চ কলেজে অঙ্ক নিয়ে পড়তে এসেও ফুটবল-মাঠের আঁক কষা ছেড়ে বেরোতে পারেননি। কলকাতা ফুটবলের পাশাপাশি বিশ্ব ফুটবলেরও মনোযোগী দর্শক, দেশবিদেশে ফুটবলের ছোটবড় আসরে হাজিরা। ব্রাজিল ও রাশিয়ায় বিশ্বকাপ কভার করেছেন, মস্কোয় চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের প্রেস বক্সে ছিলেন ভারতের একমাত্র ‘অ্যাক্রিডিটেড জার্নালিস্ট’। নিজেকে ফুটবল-ছাত্র ভাবতেই ভালবাসেন। তাই পড়ে চলেন ফুটবলেতিহাস, নিরন্তর। সেই সব পড়া, দেখা আর লেখার ফসল ‘মারাদোনা’, তাঁর চতুর্থ বই।
লেখকের ছবি – প্রশান্ত দাস
আলোচনা বা সমালোচনাগুলি পড়তে ছবির উপরে ক্লিক করুন।