“বাইরে বেরিয়েই একেবারে হতভম্ব অবস্থা। রাত্তির নয়, যেন একেবারে সূর্যের ভেতরে এসে দাঁড়িয়েছে। দলভিদের বাড়িটা জ্বলছে। গোটা একতলা দালানটাকে গিলে নিয়েছে দাউদাউ আগুনের শিখা, ভয়ঙ্কর গোঁ-গোঁ, মড়মড় আওয়াজ করে ফুট পনেরো পর্যন্ত লাফিয়ে উঠছে আগুন। প্রচণ্ড তাপের ধাক্কায় যেন ছিটকে গেল বসন্ত। কয়েক মুহূর্ত হাঁ করে চেয়ে রইল শুধু…”
১৯৪৯ সালের সেপ্টেম্বরের এক রাত। পুড়ে ছাই হয়ে গেল বাতিয়া শহরের নাদিম দলভির বাড়ি। মারা গেলেন দলভি, তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য এবং তাঁদের পোষা কুকুর। মধুসূদন সেন, আইসিএস-এর মামলতদার দলভি ছিলেন সেন সাহেবের রোজকার মাংস-মাছ-ডিমের যোগানদার। যখন জানা গেল এই অগ্নিকাণ্ড কোনও দুর্ঘটনা নয়, খুন করা হয়েছে দলভি এবং তাঁর পরিবারকে, ন্যায় বিচার পাওয়া পর্যন্ত আমিষ খাওয়া বন্ধ করলেন মধুসূদন সেন…
এই বহুস্তর আখ্যান শেষ পর্যন্ত নানা ভারতের নানা ফাঁসের রাজনৈতিক ইতিবৃত্ত। দমবন্ধকর ফাঁসের খেলায় সামিল সামান্য কুয়োর বালতি, ভক্ষ্য গো-মাংস, সরকারি ফাইল থেকে মৃত্যুদণ্ড।
উপমন্যু চ্যাটার্জি
জন্ম ১৯৫৯ পাটনায়। জীবনের ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসে। শান্ত ত্রিশটি বছর, বিশেষ কোনও কৃতিত্বের স্বাক্ষরহীন। এই সময়টাতেই, কেউ যখন বিশেষ নজর করেনি, চুপচাপ লিখে ফেলেছেন ছ’টি উপন্যাস। চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন (সময়ের একটু আগেই এবং সসম্মানে) ২০১৬ সালে, যাতে পুরোটা সময় দিতে পারেন ঘর-গেরস্থির দেখাশোনায়। পত্নী একজন, কন্যা দুই। কিছু পছন্দের কাজ একাকী করতে ভালবাসেন।
আলোচনা বা সমালোচনাগুলি পড়তে ছবির উপরে ক্লিক করুন।