ছিন্নমূল মানুষের যন্ত্রণা আর জীবনের নড়ে যাওয়া ভরকেন্দ্রের কাহিনি নেহাৎ কম নেই। তবু সেই সব কাহিনির প্রতুলতা সাহিত্যিকের উচ্চাসন থেকে, কিছুটা নৈর্ব্যক্তিক, কখনো উদাসীন আর কখনো আপন মনের মাধুরীতে প্রচ্ছন্ন। কিন্তু জীবন যে মানুষগুলিকে দেখিয়ে ছেড়েছে ঘোর মাদারির খেল, মিহির সেনগুপ্ত তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ছেঁড়া মানচিত্র আর লুণ্ঠিত মানবতার নরকে তাঁর বেড়ে ওঠা, যৌবনযাপন। গত শতকের ষাট-সত্তর দশকের কথা। দারিদ্র্য এবং চূড়ান্ত অপরিণামদর্শী রাজনৈতিক আবহাওয়ার মধ্যে চলমান জীবনের হালচাল। নানা প্রশ্নে জর্জরিত যে প্রজন্ম নিজেই খুঁজে নিতে চেয়েছিল তার উত্তর, দেশভাগের হিংস্র ক্ষতস্থানের ওপর মুঠো মুঠো নুন উজাড় করে দেওয়া পঞ্চাশের দাঙ্গা, খাদ্য আন্দোলন পেরিয়ে নকশালবাড়ির আগুনে পথে খুঁজেছিল মুক্তির দশক, কালচক্রযান সেই প্রজন্মের কথা। যে কাল শুধু পড়ে রয়েছে মিথ্যাভাস আর কল্পনার লূতাজালে আচ্ছন্ন হয়ে, অর্ধেক স্মৃতি আর বাকিটা ঐচ্ছিক বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে, তাকে প্রকাশে আনার এই সদর্প প্রচেষ্টা, এই অনবদ্য উন্মোচন।
মিহির সেনগুপ্ত
জন্ম ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালের কেওড়া গ্রামে যা বর্তমান বাংলাদেশের ঝালকাঠির অন্তর্গত। পাশের গ্রামের স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে ভর্তি হন বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে, কিন্তু এক বছর বাদে ভারতে এসে ভর্তি হলেন কলকাতার স্কুলে। উদ্বাস্তু জীবনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি ভাষায় গ্র্যাজুয়েশনের পর অ্যাকেডেমিক পড়াশুনোয় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। সংসারের প্রয়োজনে ব্যাঙ্কে চাকরি। বর্তমানে অবসর জীবন। বছর পঁয়তাল্লিশ ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা। এখন দিন কাটে লিখে ও আড্ডা দিয়ে। ‘বিষাদবৃক্ষ’ বইটির জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। ‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’ বইটির জন্য পেয়েছেন বাংলাদেশের শ্রুতি একাডেমি পুরস্কার।
আলোচনা সমালোচনাগুলি পড়তে ছবির উপরে ক্লিক করুন।
বইকথা প্রথম সংখ্যা, ২০২২ বইকথা প্রথম সংখ্যা, ২০২২ বইকথা প্রথম সংখ্যা, ২০২২