তিন ছক্কা পুট
লেখক – সব্যসাচী সেনগুপ্ত
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – শুভদীপ ভট্টাচার্য
সম্পাদনা – সামরান হুদা
নতুন জীবন নতুন জীবিকা সিরিজ
শিল্পনির্দেশনা – সায়ন্তন মৈত্র
বই নকশা – ময়াঙ্ক রাই
পৃষ্ঠা –১৯২
ডিমাই সাইজ, হার্ড বাউন্ড, কাপড়ে বাঁধাই
মূল্য – ৩৫০ ভারতীয় টাকা
ISBN – 978-93-87577-36-7

অনলাইন কিনতে – বইচই বা থিংকারস লেন
































কখনও পিছন ফিরে দেখলে, জীবনটাকে সত্যিই তিন ছক্কা পুট বলে মনে হয়। লুডো খেলার একসময় চল ছিল খুব। খেলা শেষ হয়ে যেত যখন, চার চারে ষোলোখানা ঘুঁটি আর কোনাগুলো ক্ষয়ে যাওয়া ছক্কা, গুছিয়ে রেখে দেওয়া হত কৌটোতে। সেই কৌটোও ছিল বিচিত্র। কারণ, আদতে সেটা ক্যামেরার ফিল্ম রিলের। যেগুলোতে হয়তো জোয়ান ভাজা রাখত মা। আর সেই ক্যামেরার রিল জুটত কালেভদ্রে সংসার খরচে জেরবার হওয়ার পরেও কখনও সখনও যদি বেড়াতে যেতে পারত। 

শৈশবজুড়ে  বিছিয়ে থাকা লুডোছকের এই নামাওঠায় ধরা পড়েছে জীবনের প্রতিচ্ছবি। খেলনার দোকানে নাছোড়বান্দার মতো আঁকড়ে ধরা বন্দুক। রেজাল্ট খারাপ করে ‘মরে যাবো এইবার’ ভঙ্গিতে সাইকেল নিয়ে নিচু মাথা সে হেঁটে চলেছে কেবল। সাধারণ বেঁচে থাকার পথে সে এগিয়েছে এমনই মিঠেকড়া আবহে, সুখ-দুঃখের চড়াই উতরাই টপকে একদিন এল মেডিকেল কলেজে। তুচ্ছ বিষয়ে তুতো আত্মীয়ের উপর অভিমান ভরা গনগনে যৌবনেই আছে রাত জাগা দেওয়াল লিখনে মুঠিবদ্ধ হয়ে ওঠা, সাহস ও স্পর্ধার রাজপথে হাঁটতে হাঁটতে কলকাতা চেনা… সমস্তকিছু সার বেঁধে এসে দাঁড়ায় এখন সামনে। পাশাপাশি। ভাল, মন্দ, বেদনা, উল্লাস, বিস্ময়। সবকিছু জড়িয়ে মড়িয়ে একাকার। তারুণ্য থেকে মধ্যযৌবনের চৌকাঠ পার হতে গিয়ে কখনও সুখের পবন স্পর্শ করেছে, কখনও বা মান-অভিমানের দমক টুঁটি চেপে ধরেছে সবেধন নীলমণি বড় সাধের মনপতঙ্গের। আবার বুকের অন্দরে রক্ত ঝরলেও সময়মতো তাকে সারিয়ে তুলেছে হরেক ছক্কাপাঞ্জার পুলটিশ।

এই বই সেই তিন ছক্কার গল্প।

সব্যসাচী সেনগুপ্ত

সব্যসাচী সেনগুপ্ত পেশায় চিকিৎসক। জন্মেছিলেন বার্নপুরে। তার পর একে একে বাঁকুড়া, কলকাতা, বর্ধমান, কোচবিহার, পুরুলিয়াতে কেবলই ঠাঁই নাড়া হতে হতে, অবশেষে এসে আস্তানা বেঁধেছেন জলপাইগুড়িতে। এযাবৎ ৩.৩৩ খানি বই ছাপা হয়েছে তার। তিনটি একক, একটি আরও দু’জন লেখকের সঙ্গে জোট বেঁধে। কাজ করে চলেছেন মূলত মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্ম রোগের উপরে। একমাত্র স্বপ্ন, টিবিরোগ মুক্ত পৃথিবী, যেটা ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে। প্রতি কুড়ি সেকেন্ডে মারা যাচ্ছেন একজন যক্ষ্মা রোগী।

যদি কোনও পাঠক এই শেষের মলাট পর্যন্ত পড়ে থাকেন, তবে তাঁর নিকটে লেখকের দুইখানি সনির্বন্ধ অনুরোধ। এক, যেখানে সেখানে কফ থুতু ফেলবেন না। আর দুই, সব্যসাচীর সঙ্গে দেখা হলে এক-দু’পিস নলেনগুড়ের নরমপাক খাওয়াবেন। জলপাইগুড়িতে ভাল সন্দেশের বড়ই অভাব।


ছবি- ড. স্বস্তিশোভন চৌধুরী

সমালোচনা বা আলোচনা পড়তে ছবির উপরে ক্লিক করুন।

ওঙ্কার বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত সমালোচনা, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০