হরেক জঙ্গলে মেরদণ্ড সোজা করে আজও বেঁচে প্রত্যয়ী শালপ্রাংশু মানুষেরা। সে শহরের জঙ্গলে কখনও নিত্যযাত্রীর ভূমিকায় ভিড়ে একাকী এক মানুষ, আত্মপরিচয় খুঁজে ফেরে, কখনও সাইবার ক্রাইমের জঙ্গলে মানুষের নাগরিক লালসা ঢাকে সবুজমানুষ তাঁর স্নেহের ছাতায়। এভাবেই সারা বই জুড়ে দিগন্তব্যাপী যে জঙ্গলমহল রচিত হয় তা ক্রমান্বয়ে ঢুকে পড়ে পরিচিত নগরে ও গ্রামে, বাস্তবে বা মহাকাব্যে। এভাবেই মৃণালের লেখনী যুদ্ধবিজয়ী শোভাযাত্রার সৌকর্যের কাহিনি শোনাতে বসে না বরং পথের একপাশে দাঁড়িয়ে শোভাযাত্রা নিরীক্ষণ করা অনাড়ম্বর মানুষকে দেখাতে চায়। দার্শনিকরা যেভাবে বলেছেন, সেই মানুষটি আসলে শোভাযাত্রার ভেতর খোঁজে একজনকে, যার ফেরার কথা ছিল অথচ ফেরেনি, ফেরে না কখনও। সেইসব কথনক্রিয়ার অকথিত বিন্দু বিন্দু অশ্রু সঞ্চয় করে নির্মিত ‘বিরল পাতার গাছ’। এই গ্রন্থের তেরোটি গল্পে বিধৃত স্থানিক পরিচয়ের মানুষ, অরণ্যজীবন থেকে ক্ষয়িষ্ণু গ্রাম পেরিয়ে নাগরিক দীর্ঘশ্বাস। পুনর্নির্মাণ হয়েছে মহাকাব্যের— যা সমসময়ের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে মানুষের আবহমান ইতিহাস।
মৃণাল শতপথী
জন্ম ১৯৮১ সালের ৩ মার্চ খড়গপুরে। স্কুলজীবনে সহপাঠীদের উৎসাহে লেখালেখিতে আগ্রহ। প্রথম প্রকাশিত রচনা স্কুল ম্যাগাজিনে অষ্টম শ্রেণিতে। ডায়রিতে চিঠি আকারে গল্পচর্চার শুরু। প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘পাখি’, কলেজের বাংলা বিভাগীয় পত্রিকায় ২০০১ সালে। প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘কোথাও বৃষ্টি হয়ে গেছে’ প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে। নানান বাংলা ছোট পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। গল্প প্রকাশ হয়েছে কলকাতার ‘তথ্যকেন্দ্র’ এবং ‘দেশ’ পত্রিকাতে। প্রতিশ্রুতিমান তরুণ গল্পকার হিসেবে ২০১৭ সালে পেয়েছেন ‘নারায়ণ চৌবে স্মৃতি পুরস্কার’। পেশা শিক্ষকতা। এটি তাঁর দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ।
আলোচনা/ সমালোচনা
আলোচনাগুলি পড়ার জন্য ছবি বা লিংকের উপর ক্লিক করুন।