লটন মটন পায়রাগুলি
লেখক – সুচেতনা দত্ত
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – উপমা চক্রবর্তী
সম্পাদনা – সুমেরু মুখোপাধ্যায়
শিল্পনির্দেশনা – সায়ন্তন মৈত্র
বই নকশা – ময়াঙ্ক রাই
পৃষ্ঠা – ১৬৮
ডিমাই সাইজ, হার্ড বাউন্ড, কাপড়ে বাঁধাই
মূল্য – ৩২৫ ভারতীয় টাকা
ISBN – 978-81-935370-7-7

অনলাইন কিনতে –
অ্যামাজন ইন্ডিয়া
বইচই































এই বই মোটেই ছোটদের জন্য নয়।

ছোটদের জন্য তো কত কিছু আছে—উপু-সুকু-সত্য, লীলা মজুমদার, ডক্টর সিউস, প্যাডিংটন, হ্যারি পটার, পার্সি জ্যাকসন, স্টার ওয়ারস।বড়দের জন্য আছেটা কী শুনি? কঠিন কঠিন গোমড়া প্রবন্ধ? আদিখ্যেতার একশেষ প্রেমের উপন্যাস? মাথায় না ঢোকা আধুনিক কবিতা? এটুকুই?

বড়দের বুঝি ছোট হতে ইচ্ছে করে না? করেই তো! এদিকে ছোটবেলায় বড় হওয়ার বেজায় তাড়ার মধ্যেও সে বুকের মধ্যে রেখে দিয়েছিল হরেক বিডন স্ট্রিট আর সিউড়ি, বেহালা আর বউবাজার, ময়ূরাক্ষী নদীতে পালতোলা জাহাজ আর লোডশেডিংয়ের জলসা। ভাগ্যিস! এই বড়বেলায় নজর গেছে ঝাপসা হয়ে। না দেখতে পেলে জমাবেটা কী সে?

বড়দের দুর্দশা ঝগড়ুই বুঝেছিল ভাল, নয়তো আর বলবে কেন, “শালবন থেকে রেলের লাইন দেখা যায় না, কিন্তু ট্রেনের শব্দ শোনা যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় কত দূর থেকে আসছে, আবার তারপরেই মনে হয় একেবারে কানের গোড়ায়, কিন্তু যেই না মুখ ফিরিয়ে দেখতে গেছ, অমনি আবার মনে হবে কত দূরে সরে গেছে।”

বুকের মধ্যে দুমকা জমিয়ে রেখে না দিলে ঠিক এই হাল হয়, ছোটবেলাটা মুখ ফিরিয়ে দেখতে গেলেই, মনে হয় দূরে সরে গেছে।তাঁর অবশ্য সে সব ভয় নেই, জমিয়ে রাখা ছিল কড়ির ঝাঁপি। যা উলটে ফেলা মাত্রই বাঁধা পড়ল দুই মলাটে। তৈরি হয়ে গেল ‘বড়দের জন্য ছোটদের বই’।

সুচেতনা দত্ত

সুচেতনা কোন দূরতর দ্বীপ নন। বরং কলহপ্রিয়া এবং শুচিবায়ুগ্রস্ত এক মাঝবয়সিনী।

ছবির শান্ত চোখদুটি দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই কোনও। অমনোযোগ এবং দুষ্টুমির জন্য নোবেল পুরস্কার থাকলে কিশোরীবেলায় নিশ্চিত মনোনীত হতেন বিডন স্ট্রিটের হোলি চাইল্ড ইন্সটিটিউট স্কুল থেকে। দুষ্টুমি আর ফাঁকিবাজির সেই ট্র্যাডিশন স্কটিশে অর্থনীতি পড়াকালীনও সমানে চলেছে বলে বন্ধুদলের দাবি।

কলকাতা ছেড়েছেন যদিও বছর পনের আগে, জীবনের গতিতে সেই থেকে ক্রমে মুম্বই, দিল্লি এবং ব্যাঙ্গালোরে, তবুও মগজের একটা কোটরে শীতঘুমের দিনগুলোর রসদ করে রেখেছেন উত্তর ও মধ্য কলকাতার স্কুল-কলেজ-অফিসযাপন আর সিউড়ি শহরে মামাবাড়িতে কাটানো ছুটি-খুশির রোজনামচা। ভালবাসেন গ্রীষ্মের বীরভূমের কাঠফাটা দুপুররোদ, ফাল্গুনের কলকাতায় বিকেলের চৌরঙ্গী। আকাশভাঙা বৃষ্টির ব্যাঙ্গালোর, বম্বের বেশি রাতের লোকাল ট্রেন। পাহাড়ি জায়গার শীতকালের কুয়াশাঘন সকাল। এবং, খুব গুরুত্বপূর্ণ ‘এবং’, ভারতের যে কোন প্রদেশের বিরিয়ানি!

প্রাচীন প্রবাদ অনুযায়ী, তাঁর শিরায় শিরায় প্রবাহিত লাফিং গ্যাস, ধমনীতে টিয়ার গ্যাস। বয়স যখন মাত্র সাত, এক আরশোলার জীবন নিয়ে চার লাইনের কাব্য রচনা করে সাহিত্যিক অবতারে আত্মপ্রকাশ। তারপর দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছরের বিরতির অবসান ঘটাল এই বই। পাঠক ও বন্ধুদের সনির্বন্ধ অনুরোধে অবশেষে লিখেই ফেললেন, আলস্যকে ফটোফিনিশে হারিয়ে।

সমালোচনা আলোচনাগুলি পড়তে ছবির উপরে ক্লিক করুন।

সাপ্তাহিক বর্তমান ১২ জানুয়ারি ২০১৯