দাস্তান-এ দাওয়াখানা
লেখক – সব্যসাচী সেনগুপ্ত
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – শুভদীপ ভট্টাচার্য
সম্পাদনা– সামরান হুদা
শিল্পনির্দেশনা – সায়ন্তন মৈত্র
শিরোনামলিপি- লিপিঘর
বই নকশা – ময়াঙ্ক রাই
পৃষ্ঠা –২৬৪
ডিমাই সাইজ, হার্ড বাউন্ড, কাপড়ে বাঁধাই
মূল্য – ৫০০ ভারতীয় টাকা
ISBN – 978-93-87577-52-7

অনলাইন কিনতে –
বইচই ও থিংকারস লেন ডট কম































এই বই এক খিদ্যমান ডাক্তারের জমানো রূপকথা। কিছু হারিয়ে যাওয়া কিছু জীবন ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন। যক্ষা হাসপাতালের নিঝুমপুরীতে একলা রাজপুত্র। অথচ ডাক্তার হতে চায়নি সে। ২০০৮ এ কাঁধে একটা শস্তার রুকস্যাক আর পকেটে দেড়শো টাকা নিয়ে যখন নেমেছিল নিউ জলপাইগুড়ি ইস্টিশনে আর অটোয় বাস স্ট্যান্ডের দিকে যেতে যেতে অবাক চোখে দেখেছিল ধুলোয় ঢাকা শহরের দিগন্তে নীলচে পাহাড়ের হাতছানি, তখনও ডাক্তার হতে চায়নি সে। এম বি বি এস পাস করেছে শুধুমাত্র। এবং সেটাও তাঁর বাবা চেয়েছিল বলে।

আর তারপর হঠাৎ সবটা বদলে গেল একটু একটু করে। একটার পর একটা মুখ তাঁর আউটডোরের চেয়ারের সামনে এসে দাঁড়াতে শুরু করল। বুঝল এই গল্পগুলোকে ছুঁতে চেয়েছে সে। চেয়েছে এই গল্পগুলোর মাঝখানে আমৃত্যু থেকে যেতে। লকডাউনে দুখানা কেবল মুলো নিয়ে যাওয়া রিকশাওয়ালা তেগ বাহাদুর, বেখাপ্পা বুটজুতো পরে মেয়ের হাত ধরে একই সানকি থেকে ভাত খাওয়া প্রৌঢ়, যে দিনকতক আগেই বিক্রি করে দিয়েছে আরেক মেয়েকে কিংবা ‘পায়খানা হয় না… পায়খানা হয় না’ বলে হরেকদিন বি কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হাসিমুখো এক বৃদ্ধ। বুঝল সত্যিকারের ভারতবর্ষকে যদি চিনতে হয় তাহলে ডাক্তার হয়ে উঠতে পারাটাই বোধহয় সবচাইতে শ্রেয় পথ। 

কোথা কোথা থেকে এখানে আসে এরা? কুয়াশা মাখা দার্জিলিং, চা বাগানের আলিপুরদুয়ার, খেজুর গাছের দিনাজপুর, সীমান্ত প্রদেশের কোচবিহার। সঙ্গে করে নিয়ে আসে ছোট্ট ছোট্ট গল্প। সবই আশ্চর্য অবাক করা। আর সেইসব গল্পই সে কুড়িয়ে নেয় রাউন্ড দিতে দিতে। কেউ কেউ এতদিন ছিল শয্যাশায়ী। এখন রোদ্দুরে এসে জুত করে বসে। আর নাড়ি টিপে দেখবার প্রয়োজন নেই। খাট থেকে নেমে আসতে পেরেছে আলোর বৃত্তে। ধীরে ধীরে সে টের পায় ক্রমশ ডাক্তার হয়ে উঠছে। মানুষ যাকে মনে করে চিদ্রূপ। ভালবাসে। ভরসা করে। যার জন্য মাইকিং হয় ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিশ করতে হবে’। রাত্রে এক বালতি কাঁকড়া হাতে হাজির হয় পেশেন্ট পার্টির কেউ। আছে এমার্জেন্সি ডিউটির দুরোদর মৃত্যুর আনাগোনা। দিশেহারা মানুষ খুঁজে বেড়ায় বরাভয়। এই বই জুড়ে তাঁর সেরকশ ডাক্তার হয়ে ওঠার গল্প।

সব্যসাচী সেনগুপ্ত

পেশায় চিকিৎসক। বর্তমানে জলপাইগুড়ি টিবি হসপিটালে কর্মরত। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত গত ১৪ বছর। লেখালিখির সূত্র মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে। এযাবৎ প্রকাশিত একক বইয়ের সংখ্যা ছয়। স্বপ্ন—যক্ষামুক্ত পৃথিবী ।

ফোটো- ড. সুরভিপ্রজ্ঞা দাশগুপ্ত

আলোচনা বা সমালোচনাগুলি পড়তে ছবির উপরে ক্লিক করুন।