১৯৮৯-এর শেষে তালি লাগল দুই বার্লিনে আর ১৯৯১ ভেঙে দিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। ৯১, ৯৩, ৯৪ – ডিমনিটাইজেশন, বারে বারে বাতিল হতে লাগল পুরনো নোট। দেশের অর্থনীতির হাল বেচাল, চলছে বিনিময় প্রথা। সেই সময় ছাত্রজীবনের দশটা বছর উজবেকিস্থানে কাটিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মেয়ে ১৯৯৫-এর শেষে কলকাতায় ফিরলেন সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে। অসমবয়সী প্রেমিকটি অল্পদিন পরই চম্পট। সিঙ্গল মাদারের ঠাঁই হল না নিজের পরিবারে। শুরু হল নি:সঙ্গযাপন, চাকরি খোঁজা।
নব্বই-এর কথামালায় তখন নতুন ভাষা যোগান দিচ্ছে কম্পিউটার। দলে দলে মানুষ আসছে সেই সব অধুনাবিস্মৃত ভাষা শিখতে। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে ট্রেনিং ইন্সটিট্যুট। প্রথম চাকরি হল সেখানে। পরপর চাকরি বদল। কখনও ট্রাভেল এজেন্সি কখনও বিজ্ঞাপন সংস্থায়। এ বইতে আছে কেবলমাত্র চারটে চাকরির গল্প। যার শেষ ওয়াইটুকে সমস্যা কাটিয়ে ডানা মেলা আইটি সম্ভাবনার বিকাশে। এই আত্মকথন আবার এক জনমদুখিনী মায়ের। বহতা জীবনের গল্পে কোথাও যেন মিশে আছে চিরায়ত ঠাকুরমার ঝুলির অনুরণন। ‘মায়ার পাহাড় মায়ায় ঢাকা/ মায়ায় মারে তীর―/ এ সব যে আনতে পারে/ সে বড় বীর।’
যোষিতা
কৈশোরে যোষিতার নাটক লেখায় উৎসাহ থাকলেও সময়ের সঙ্গে সেসব পাণ্ডুলিপি হারিয়ে গেছে। ২০০৩ থেকে আবার নতুন করে লেখার অভ্যাস তৈরি হয়, দীর্ঘ বিদেশবাসে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষাকে আঁকড়ে ধরার তাগিদে। খেতে ভালবাসেন কুচোমাছের চচ্চড়ি দিয়ে লাল চালের ভাত। মুখশুদ্ধিতে ঝাল লজেন্স। নিঃসঙ্গ বিদেশে বাংলায় দুটো কথা বলার জন্য দশ-বিশ মাইল হেঁটে যেতে পারেন অনায়েসে। গলায় সুর-টুর না থাকলেও খোলা আকাশের নীচে গান গাইতে মোটেও ডরান না। লজ্জার ধার ধারেন না যখন লিখতে বসেন নিজের কথা। ভূতের ভয় পান অল্প বিস্তর। আইটি আইটি পা পা তার প্রথম বই।
সমালোচনা আলোচনাগুলি পড়তে ছবির উপর ক্লিক করুন।